কেন শেখ হাসিনাকে জনগণ আবার ক্ষমতায় চায়?- ডা.এস. এ. মালেক

666

একটা রক্তাক্ত মুক্তির সংগ্রামের মাধ্যমে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে, আজ প্রায় ৪৬ বছর। এই ৪৬ বছরে বিভিন্ন দল ও ব্যক্তি এদেশে ক্ষমতাসীন হয়েছেন। সব দল ও ব্যক্তিকে জনগণ বসিয়েছে, সঠিক বাস্তবতা কিন্তু সেরূপ নয়। ’৭০ এর নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ বিজয় সত্ত্বেও পাকিস্তানী সামরিক জান্তা ক্ষমতা হস্তান্তরে তালবাহানা করা যার ফলশ্রুতিতে মহান মুক্তিযুদ্ধ এবং জাতির জনকের নেতৃত্বে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের প্রথম স্বাধীন সরকার হিসেবে মুজিবনগর সরকার মেহেরপুরে মুজিবনগরে শপথ গ্রহণ করে। যা মুজিবনগর সরকার নামে অবহিত করা হয়।

দেশ স্বাধীন হওয়ার পর বঙ্গবন্ধু পাকিস্তানের কারাগার থেকে দেশে ফিরে আসলে সরকারের নেতৃত্ব গ্রহণ করেন। ’৭২ এর সংবিধান ভিত্তিক ’৭৩ এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত করে সাংবিধানিক ধারায় নির্বাচিত হয়ে বাংলাদেশে প্রথম সংসদীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেন বঙ্গবন্ধু। সেই সরকার ৩ বছরের অধিক ক্ষমতায় ছিলেন।

’৭৫ এর ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে নৃশংসভাবে হত্যা করার পর প্রথমে খন্দকার মোশতাক ও পরে জেনারেল জিয়া বাংলাদেশের দায়িত্ব জোর জবরদস্তি করে গ্রহণ করেন। জিয়া প্রায় সাড়ে ৬ বছর ক্ষমতায় থাকার পর হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে অপসারিত হলে জেনারেল এরশাদ ক্ষমতায় আসেন। এরশাদ প্রায় সাড়ে ৯ বৎসর ক্ষমতা দখল করে ছিলেন। ’৯১ এর নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে বিএনপি অর্থাৎ বেগম খালেদা জিয়া ক্ষমতাসীন হন। ’৯৬ এ নির্বাচনে শেখ হাসিনা বিজয়ী হয়ে নির্বাচিত সরকার গঠন করেন।

২০০৭-০৮ সালে প্রায় ২ বছর সামরিক বাহিনী সমর্থিত কেয়ারটেকার সরকার দেশ শাসন করে। ২০০৮ সালে আবার শেখ হাসিনা নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতাসীন হন। ২০১৪ সালে শেখ হাসিনার মেয়াদ পূর্ণ হলে ৫ জানুয়ারি বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করা সত্ত্বেও সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতায় নির্বাচন হয় এবং সে নির্বাচনেও শেখ হাসিনা নির্বাচিত হন। সেই থেকে প্রায় ১০ বছর শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আছেন।

আগামী জানুয়ারির পূর্বেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত করে নতুন সরকার গঠন করতে হবে। এই হচ্ছে বাংলাদেশের সরকার পরিবর্তনের গতিধারা। ১৯৭৬ সালে প্রকৃত অর্থে জেনারেল জিয়া সামরিক অভ্যুত্থানের ধারায় ক্ষমতা দখল করে প্রায় সাড়ে ৬ বছর বাংলাদেশ শাসন করেন। সেই সময়ে জিয়ার স্লোগান ছিল ‘অর্থ কোন সমস্যা নয়’ ও তাঁর কর্মসূচি ছিল ‘খাল খনন বিপ্লব’। তার দল ছিল বিএনপি ও তার সাথে সংশ্লিষ্ট ছিল স্বাধীনতার শত্রুরা।

বলা হয়ে থাকে জিয়া বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবর্তক। কেননা বঙ্গবন্ধু একটা জাতীয় দল বাকশাল গঠন করে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চেয়েছিলেন। বাকশাল গঠনের কারণেই বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়। বাকশাল গঠন করার পূর্বেই একটা যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশকে পুনর্গঠিত করার মহাপরিকল্পনা বঙ্গবন্ধু গ্রহণ করেন। একটা প্রাদেশিক সরকারকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদা দেয়া কোনও সহজ সাধ্য ছিল না। সাড়ে ৩ বৎসরের মাথায় বঙ্গবন্ধু যখন দেশকে উন্নয়নের পথে দ্রুততম সময়ে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার আকাঙ্ক্ষা নিয়ে বাকশাল গঠন করলেন তখনই তাঁকে হত্যা করে উন্নয়নের গতি-প্রকৃতি, স্বাধীনতার বিরোধী ধারায় প্রবাহিত হল।

ফলে যে ধারায় বঙ্গবন্ধু মুক্তিযুদ্ধের চেতনাভিত্তিক বাংলাদেশ গঠন করার চিন্তা করেছিলেন, তা মুখ থুবড়ে পড়ে রইল। এরপর আসল জেনারেল এরশাদের আমল। প্রায় সাড়ে ৯ বৎসর তিনি দেশ শাসন করেছেন। গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে তাকে ক্ষমতা থেকে সরানো হয়েছে। এই সময়ে যে দেশের উন্নয়ন হয়নি তা নয়। তবে উন্নয়নের গতি-প্রকৃতি নির্ধারণ ক্ষেত্রে জেনারেল জিয়াকে জেনারেল এরশাদ অনুসরণ করে। দেশকে উন্নয়নের পথে এগিয়ে যাওয়া কোন প্রকল্প এই দুই জেনারেল বাস্তবায়ন করেননি। তাই অগ্রগতি বলতে যা বোঝায় তা হয়নি।

প্রথমবার তো ক্ষমতাসীন হন শেখ হাসিনা ১৯৯৬ সালে। ১৯৯৬-২০০১ পর্যন্ত এই ৫ বছরে শেখ হাসিনা দেশ ও জাতিকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ধারায় ফিরে আনেন। দেশকে উন্নয়নের পথে এগিয়ে নিতে তিনি মাত্র ৫ বছরে দেশের চেহারা পাল্টে দেন। ১৯৯৬-২০০১ শাসনামলকে বাংলাদেশের উন্নয়নের স্বর্ণযুগ বলা হয়ে থাকে। এর পূর্বে দেশে যখন প্রতিবছর ৪০-৫০ লক্ষ টন খাদ্য আমদানি করতে হত, তা ৫ বছরে শেখ হাসিনা ৫-১০ লক্ষ টনে নামিয়ে আনে। তার শাসনামলে প্রথম ৫ বছরে বাংলাদেশ কৃষিভিত্তিক অর্থের উপরে দাঁড়িয়ে যায়। ভয়াবহ প্রাকৃতিক দূর্যোগ সত্ত্বেও তিনি প্রথম ৫ বছরে দেশকে প্রায় খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করেন। এই ৫ বছরে আইন শৃঙ্খলার পরিস্থিতি সুনিয়ন্ত্রণে এনে তিনি উন্নয়নের গতিধারা বেগবান করেন। রাষ্ট্রীয় প্রশাসন ও রাজনৈতিক দল ও সামাজিক শক্তিসমূহকে তিনি উন্নয়নের ধারায় সংশ্লিষ্ট করেন। দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণ করে উন্নয়ন ও অগ্রগতিকে এগিয়ে নিয়ে সব প্রচেষ্টায় তিনি ব্যস্ত ছিলেন।

ঐ সময় গোটা প্রশাসন ও রাষ্ট্রীয় নীতিমালা এমনভাবে প্রয়োগ করা হয়েছিল যে, জনগণের সংশ্লিষ্টতার কারণে উৎপাদন ও উন্নয়নের গতি ত্বরান্বিত হয়েছিল। এরপর ২০০৮ সালে পুনরায় নির্বাচিত হয়ে তিনি ঠিক ’৯৬ এর ধারায় দেশকে পরিচালনা করেন। দুর্ভাগ্য হলেও সত্য যে, ২০০১ সাল থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত বেগম জিয়া, জিয়াউর রহমানের আদর্শ বাস্তবায়নের নামে যেভাবে দুঃশাসন, রাষ্ট্রীয় অর্থ লুট-পাট ও স্বৈরাচারী মনোভাবে রাষ্ট্র পরিচালনা করেন তা দেশের জন্য ভয়াবহ দুর্ভোগ নেমে আসে। (২০০৮-২০১৪) সাল পর্যন্ত শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে ওই দুর্ভোগের ঘনঘটা থেকে উদ্ধার করে আবারও উন্নয়ন ও অগ্রগতির ধারা প্রবর্তন করেন।

শেখ হাসিনার শাসনামলে যেসব উন্নয়ন প্রতিহিংসার বশবর্তী হয়ে বন্ধ করে দিয়েছিলেন, তা আবার শেখ হাসিনা চালু করে ছিলেন। সর্বক্ষেত্রে দেশকে উন্নয়নের ধারায় এগিয়ে নিয়ে যান। ২০১৪ সালে সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতায় যে নির্বাচন হয়, তাতে বিরোধীদল সৃষ্ট ধ্বংসযজ্ঞ মোকাবেলা করে যেভাবে দ্রুততার সাথে আইন শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ এবং সুশাসন প্রতিষ্ঠা করে দেশকে এগিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা করেন, তাতে করে ২০১৪ সালে যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত করতে হয়েছিল, তাতে করে রাজনৈতিক সংকট সৃষ্টির সম্ভাবনা থাকলেও বিরোধীদল সংকট সৃষ্টি করতে সক্ষম হয়নি।

নির্বাচন কিছুটা অগণতান্ত্রিক হলেও সুশাসনের মাধ্যমে শেখ হাসিনা মানুষের হৃদয় জয় করে প্রায় ৫ বছর ক্ষমতায় রয়েছেন। বিগত ১০ বছর ক্ষমতায় থাকার কারণে বাংলাদেশ আজ ২০১৮ সালে প্রায় মধ্যম আয়ের দেশে রূপান্তর হয়েছে। আজ বাংলাদেশের একজন মানুষের আয় ১৭০০ ডলার, জিডিপি ৭.৮ ভাগ, মুদ্রাস্ফীতি ৬ এর নিচে, খাদ্য উৎপাদন প্রায় ৩.৬ কোটি টন। বৈদেশিক মুদ্রা মজুদ ৩৩ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি। গুদামে মজুদকৃত খাদ্যের পরিমাণ প্রায় ১৭ লক্ষ টন। আমরা এখন খাদ্যশস্য বিদেশে রফতানি করার পর্যায়ে পৌঁছেছি। খাদ্য নিরাপত্তা বলতে যা বোঝায় তা আজ সুনিয়ন্ত্রিত। বাৎসরিক উন্নয়ন বাজেট ১.৭০ লক্ষ কোটি টাকা। আমাদের বাজেটের প্রায় ৯০ শতাংশ নিজেদের অর্থে আমরা ব্যয় করি। মাত্র ১০ শতাংশ অর্থ বিদেশি বিনিয়োগ, বছরের প্রথম সপ্তাহে আমাদের শিক্ষার্থীদের হাতে ৩৫ কোটি বই বিনামূল্যে সরবরাহ করে আসছি। প্রায় ১৫ হাজার পল্লী স্বাস্থ্য কেন্দ্র আজ চালু আছে। আজ ইউনিয়ন পর্যায়ে মেডিক্যাল গ্র্যাজুয়েট স্বাস্থ্য সেবা দিচ্ছেন। গ্রামের মানুষকে আজ উপজেলায় আসতে হয় না। অ্যান্টিবায়েটিকের মতো ঔষধও বিনামূল্যে পেয়ে থাকেন। শিশু কল্যাণ কেন্দ্র’র গ্রামে গ্রামে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।

গুনে দেখুন এখন সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়-কৃষি মহাবিদ্যালয়, মেডিকেল কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়, প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় সরকারী-বেসরকারী সংখ্যা কত। সরকারী শিক্ষা ও স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে বিপ্লব সংঘটিত হয়েছে। দারিদ্র্যসীমা আজ ৪৮ থেকে ২৩ ভাগে নামিয়ে আনা হয়েছে। একজন কৃষি শ্রমিক দৈনিক যা আয় করে তা দিয়ে ১০ কেজি চাল কেনা সম্ভব। একজন রিকশা শ্রমিক এখন ১০ হাজার টাকা মাসে আয় করে। ৪র্থ শ্রেণির বেতন সর্বনিম্ন ৮ হাজারে উন্নীত। তাছাড়া দরিদ্রদের ভরণপোষণের জন্য সরকার প্রয়োজনবোধে লক্ষ টন চাল বিনামূল্যে বিতরণ করেছেন। মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা দেয়া হচ্ছে। পথে-ঘাটে কোথাও একটা ভিক্ষুকের সংখ্যা অনেক কমে এসেছে। পেশাগত ভিক্ষুক ছাড়া কেউ সাহায্যের জন্য হাত বাড়ায় না। নদীভাঙ্গা মানুষকে তাৎক্ষণিকভাবে পুনর্বাসিত করা হয়। বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের জন্য আশ্রয়কেন্দ্র তৈরি করা হচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী তার নিজস্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী একটি বাড়ী, একটি খামার করে গ্রামীন চিত্র পাল্টে দিয়েছেন। বেকার যুবকেরা জামানত ছাড়াই ৩ লক্ষ টাকা ঋণ নিয়ে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে পারে। যারা বিদেশে গিয়ে চাকরি করতে চান তাদের জন্য বিশেষ ট্রেনিং ব্যবস্থা করা হয়েছে এবং সে কারণে বৈদেশিক মুদ্রা আয় ক্রমাগত বেড়েই চলেছে। এই সরকার আমলে বিশেষ করে গরীব মানুষদের শিক্ষাক্ষেত্রে যেভাবে অনুদান দেওয়া হচ্ছে, তা দক্ষিণ এশিয়ার কোন দেশে দেওয়া হচ্ছে কি না তা সন্দেহ। প্রায় ১০০টি বিশেষ শিল্পাঞ্চল স্থাপন করে বিদেশে বিনিয়োগের সুযোগ প্রদান, আগামী কয়েক বছরে লক্ষ লক্ষ বেকারদের চাকরি জুটবে।

মেগা প্রজেক্টের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ পিছিয়ে নেই। পদ্মা সেতুর মতো বৃহত্তম সেতু আমরা নিজস্ব অর্থে কাজ শুরু করেছি। কর্ণফুলী নদীতে সর্বাধুনিক প্রযুক্তিভিত্তিক টানেল নির্মিত হচ্ছে। মেট্টোরেলের কাজ শুরু হয়েছে। অসংখ্য ফ্লাইওভার নির্মাণ করা হয়েছে। একাধিক সমুদ্র বন্দর তৈরী হয়েছে। বিদ্যুৎ ক্ষেত্রে বিপ্লব হয়েছে। শেখ হাসিনার বর্তমান শাসনামলে বিদ্যুৎ উৎপাদন ৩ হাজার মেগাওয়াট থেকে ২০ হাজার মেগাওয়াট উন্নীত হয়েছে। আগামী কয়েক বছরে শতভাগ বিদ্যুৎ হবে। শেখ হাসিনার উদ্যোগ ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ এ পরিকল্পনা সফলভাবে বাস্তবায়িত হতে চলেছে। গার্মেন্টস রফতানিতে আমরা বিশ্বের ২য়, মৎস্য উৎপাদনে ৩য়।

গত ১০ বছরে এমন কোনও ক্ষেত্র নেই যেখানে উন্নয়ন হয়নি। তাই বিশ্ব আজ উন্নয়নের মডেল হিসেবে বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দিয়েছে। বাংলাদেশের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী একজন প্রাজ্ঞ, যোগ্যতাসম্পন্ন শাসকই নন, তার মানবতাবাদী গুণাবলির জন্য বিশেষ করে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে তাঁকে ‘মাদার অব হিউম্যানিটি’ উপাধি দেয়া হয়েছে। তিনি আজ শুধু বাংলাদেশের নেতা নন, তিনি বিশ্ব নন্দিত নেতাও বটে। বিশ্বের এমন কোন সঙ্কট নেই যেখানে তিনি কথা বলেন না এবং তাঁর কথা গুরুত্বের সাথে গ্রহণ করা হয়। শেখ হাসিনাকে জাতিসংঘ একজন শ্রদ্ধার পাত্র হিসাবে মনে করেন।

সৎ, সাহসী ও পরম দেশপ্রেমে উদ্ধৃদ্ধ যোগ্যতাসম্পন্ন, দেশের মানুষের জন্য নিবেদিত এই মহান নেত্রীকে যারা দেশ পরিচালনার দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দিয়ে কুচক্রীদের হাতে গণতন্ত্রের দোহাই দিয়ে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেওয়ার ষড়যন্ত্র করছেন, তাদের একবার উপলব্ধি আসুক মানুষের জন্য শেখ হাসিনা জীবন উৎসর্গ করে দেশকে যে পর্যায়ে নিয়ে এসেছেন, তাকে ক্ষমতাচ্যুত করলে দেশ আজ কোন অবস্থায় গিয়ে দাঁড়াবে।

অন্ধকারের সেই দিনগুলোতে বাংলার মানুষ আর ফিরে যেতে চান না। বাংলার দুঃখী মানুষের শেষ আশ্রয়স্থল বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা তাঁর হাতেই বাংলাদেশ সবচেয়ে বেশি নিরাপদ। তিনি দিনবদলের অঙ্গীকার নিয়ে যে পথচলা শুরু করেছিলেন, তাঁর স্বার্থকতা আজ আকাশচুম্বী। বাংলাদেশ আজ সম্ভাবনাময় একটি দেশ। বিশ্বের বিভিন্ন অর্থনৈতিক সংস্থার জরিপে পূর্বাভাস দেয়া হচ্ছে, বাংলাদেশের এই উন্নয়নের গতিধারা অব্যাহত থাকলে বাংলাদেশ ২০৫০ সালের আগেই বিশ্বের অর্থনৈতিক শক্তিধর রাষ্ট্রের তালিকায় ২৩ নম্বর স্থানে পৌঁছে যাবে। বাংলাদেশ আজ ‘তলাবিহীন ঝুড়ির’ দেশ নয়।

১৯৭৫ সালে ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুর নির্মম হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে জাতি যে অন্ধকারের অমানিশায় পতিত হয়েছিল সেই অভাগা জাতিকে আলোর পথে পরিচালনা করছেন দেশরত্ন শেখ হাসিনা। ১৯৮১ সালের ১৭ মে শেখ হাসিনার সেই মহাপ্রত্যাবর্তন আজ জাতিকে সত্যিই করেছে মহিমান্বিত ও গৌরবান্বিত। জননেত্রী প্রধানমন্ত্রী নৌকার কাণ্ডারি শেখ হাসিনা- আপনার সংগ্রাম ও সাফল্যের গৌরবগাঁথা ছড়িয়ে পড়ুক দেশ থেকে দেশান্তরে।