শত শত মামলা নিয়ে ভোটের মাঠে বিএনপি নেতারা

750

একই আসনে বিএনপির প্রত্যয়নপত্র নিয়ে প্রার্থী মনোনীত হয়েছেন আনোয়ারুজ্জামান; তার বিরুদ্ধেও রয়েছে ৭২টি মামলা।এই দুজন ছাড়াও বিএনপি নেতা মির্জা আব্বাস, আব্দুস সালাম, হাবিবুর রশিদ, নাসির উদ্দিন আমেদ অসীম, জি এম শামসুল হক, আতিকুল ইসলাম মতিন, মো. আমিনুল হক ও মুন্সি বজলুল বাসিদ আঞ্জু, এস এম আসাদুজ্জামান রিপন, মোহাম্মদ আহসান উল্লাহ হাসান ও এসএম জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে শতাধিক পর্যন্ত মামলা থাকলেও তাদের মনোনয়নপত্র গৃহীত হয়েছে।অপরদিকে ঋণ খেলাপের কারণে ঢাকায় বিএনপির মনোনীত সাতজনের প্রার্থিতা বাতিল হয়েছে, যাদের মধ্যে মির্জা আব্বাসের স্ত্রী আফরোজা আব্বাসও রয়েছেন।রোববার ঢাকার বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ে রিটার্নিং অফিসার কে এম আলী আজম সাইফুল আলম নীরবের মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করেন।

এ সময় তিনি বলেন, “যুবদলের এই নেতার বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় মামলা থাকলেও তার কোনো ঋণ খেলাপের তথ্য নেই। মনোনয়নপত্রের অন্যান্য সকল তথ্য সঠিক আছে।”একই ঘটনা ঘটেছে ঢাকা-৫ আসনে বিএনপির প্রার্থী মো. নবী উল্লাহর ক্ষেত্রে। তার বিরুদ্ধে ১২১টি মামলা রয়েছে বলে মনোনয়ন বাছাইয়ের সময় জানানো হয়। তবে তিনি কোনো ব্যাংকের ঋণ খেলাপী নন।

ঢাকা-৮ আসন থেকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বৈধ প্রার্থী হিসেবে বিবেচিত হয়েছেন। তার বিরুদ্ধে ৪২টি মামলা রয়েছে। এ আসন থেকে ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন নির্বাচন করছেন। ঢাকা-৯ আসন থেকে বিএনপির বৈধ প্রার্থী হয়েছেন ঢাকা মহানগর (দক্ষিণ) বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রশিদ; তার বিরুদ্ধে রয়েছে ৮০টি মামলা। ঢাকা-১০ আসনে বিএনপির প্রত্যয়নে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া তিনজনের সবার মনোনয়ন বৈধ হয়েছে। এর মধ্যে নাসির উদ্দিন আমেদ অসীমের বিরুদ্ধে মামলা থাকলেও অপর দুই প্রার্থী শেখ রবিউল আলম ও আব্দুল মান্নানের বিরুদ্ধে কোনো মামলা নেই। ঢাকা-১১ আসনে বিএনপির দুই প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করে দুইজনই বৈধ বিবেচিত হয়েছেন। তাদের মধ্যে এ জি এম শামসুল হকের বিরুদ্ধে ২২টি মামলা থাকলেও শামীম আরা বেগমের বিরুদ্ধে কোনো মামলা নেই।

ঢাকা-১৩ আসনে তিনজন বিএনপি থেকে মনোনয়নপত্র জমা দিয়ে সবাই বৈধ হিসেবে বিবেচিত হয়েছেন। তাদের মধ্যে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালামের বিরুদ্ধে ১৭টি মামলা রয়েছে। একই আসনে বিএনপির আরেক বৈধ প্রার্থী আতিকুল ইসলাম মতিনের বিরুদ্ধে রয়েছে ১৫টি মামলা। এছাড়া একই আসনে দলটির আরেক বৈধ প্রার্থী হিসেবে বিবেচিত হলেন আতাউর রহমান ঢালী।

এ আসনে আওয়ামী লীগের বৈধ প্রার্থী হিসেবে মনোনীত হলেন ঢাকা মহনগর (উত্তর) আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. সাদেক খান।ঢাকা-১৪ আসনে বিএনপির বৈধ প্রার্থী হিসেবে মনোনীত হয়েছেন মো. আমিনুল হক ও মুন্সি বজলুল বাসিদ আঞ্জু। তাদের মধ্যে আমিনুল হকের বিরুদ্ধে ৬টি ও আঞ্জুর বিরুদ্ধে ১১টি মামলা রয়েছে। ঢাকা-১৫ আসনে বিএনপির মনোনয়নে দুইজন প্রার্থী বৈধতা পেয়েছেন। এর মধ্যে জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল ডা. শফিকুর রহমানের বিরুদ্ধে ৩৩টি মামলা এবং বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক এস এম আসাদুজ্জামান রিপনের বিরুদ্ধে ১০টি মামলা রয়েছে। ঢাকা-১৬ আসনে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে মনোনীত হওয়া মোহাম্মদ আহসান উল্লাহ হাসানের বিরুদ্ধে ৩৩টি মামলা রয়েছে। ঢাকা-১৮ আসনে বিএনপির দুই প্রার্থী বৈধ হয়েছেন। তাদের মধ্যে এসএম জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে রয়েছেন ১৩৮টি মামলা; তবে আ ন হ আকতার হোসের বিরুদ্ধে কোনো মামলা নেই। তবে ঢাকা-১৭ আসনে বিএনপি থেকে মনোনীত দুই প্রার্থী ফরহাদ হালিম ও রুহুল আলম চৌধুরীর বিরুদ্ধে কোনো মামলা নেই।এ আসনটিতে আওয়ামী লীগের হয়ে দুই প্রার্থী আব্দুল কাদের খান ও আকবর হোসেন পাঠানের (নায়ক ফারুক) মনোনয়ন বৈধ ঘোষণা করেছে রিটার্নিং কর্মকর্তা। একই আসনে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এইচএম এরশাদের মনোনয়নও বৈধ হয়েছে।

মনোনয়নপত্র বাছাই শেষে রিটার্নিং কর্মকর্তা কে এম আলী আজম সাংবাদিকদের বলেন, “যেসব দল থেকে একাধিক প্রার্থী বৈধ বলে বিবেচিত হয়েছেন, তাদের মধ্যে কেউ যদি নিজে থেকে প্রার্থিতা প্রত্যাহার না করেন তাহলে তার দল যাকে বিবেচনা করে আমাদের কাছে তালিকা দেবেন আমরা সেই তালিকা অনুসারে বৈধ বলে প্রার্থীকে ঘোষণা করব। আগামী ৯ ডিসেম্বরের আগে সংশ্লিষ্ট দলের তালিকা পাওয়ার পর সেই তালিকা অনুসারে একক প্রার্থী ঘোষণা করা হবে।”