যশোর শিক্ষাবোর্ডের আড়াই কোটি টাকা লোপাট

240

যশোর প্রতিনিধি : যশোর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ডের চেক জালিয়াতির মাধ্যমে আড়াই কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ ‍উঠেছে। বৃহস্পতিবার (৭ অক্টোবর) বিষয়টি কর্তৃপক্ষের নজরে আসে। এরপর ঘটনা তদন্তে কলেজ পরিদর্শন কে এম রব্বানিকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে।

বোর্ড সংশ্লিষ্টরা জানান, যশোর শিক্ষাবোর্ডের ২০২০-২১ অর্থবছরে কেনাকাটার আয়কর ও ভ্যাট পরিশোধ বাবদ ১০ হাজার ৩৬ টাকার নয়টি চেক ইস্যু করা হয়। বোর্ডের আয়-ব্যয়ের হিসাব ব্যাংক স্টেটমেন্টের সঙ্গে মেলাতে গিয়ে দেখা যায়, ওইসব চেকের বিপরীতে দুই কোটি ৫০ লাখ ৪৪ হাজার ১০ টাকা উত্তোলন করা হয়েছে। এরপর দ্রুত হিসাব প্রদান শাখার হিসাব রেজিস্ট্রারের সঙ্গে মিলিয়ে দেখা হয়।

বোর্ডে সংরক্ষিত মুড়ি বইয়ের নয়টি চেকের তারিখ অনুযায়ী, হিসাব শাখায় ব্যয় রেজিস্ট্রারে ভ্যাট ও আয়কর বাবদ সরকারি কোষাগারে জমা দেওয়ার জন্য চেকগুলো ইস্যু করা হয়। তবে, এসব চেকের বিপরীতে ভ্যাট ও আয়কর বাবদ সরকারি কোষাগারে অর্থ পরিশোধিত হয়নি। যশোরের ভেনাস প্রিন্টিং অ্যান্ড প্যাকেজিং সাতটি ও শাহী লাল স্টোর দুটি চেকের মাধ্যমে বোর্ডের এই টাকা উত্তোলন করেছে বলে অভিযোগ।

নিয়ম অনুযায়ী, কোনও প্রতিষ্ঠান বোর্ডে মালামাল সরবরাহের লক্ষ্যে বোর্ডের সচিব কর্তৃক স্বাক্ষরিত কার্যাদেশ প্রাপ্তির পর কার্যাদেশে উল্লিখিত নির্ধারিত সময়ের মধ্যে স্টোরে পণ্য সরবরাহ করে চালান ও বিল ভাউচার দাখিল করে। এরপর বোর্ডের সচিব স্টোরকিপারের মাধ্যমে মালামাল বুঝে নিয়ে বিল প্রদানের জন্য রেজিস্ট্রারের মাধ্যমে বিল ভাউচার হিসাব প্রদান শাখায় পাঠান। কিন্তু এক্ষেত্রে কোনও বিল ভাউচার নথিতে উপস্থাপন করা হয়নি।

এ বিষয়ে বোর্ডের সচিব প্রফেসর এ এম এইচ আলী রেজা  জানান, ‘আমি অফিসের কাজে বাইরে ছিলাম। গতকাল বিকলের অফিসে আসার পর হিসাব শাখার কর্মকর্তারা বিষয়টি আমাকে অবহিত করেন। প্রতিবছর শেষে হিসাব করি। এই হিসাব করতে গিয়ে বিষয়টি ধরা পড়েছে। ভেনাস প্রিন্টিং প্রেসের সঙ্গে গত এক বছরে আড়াই থেকে তিন লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। আর শাহী লাল স্টোর একটি ফটোস্ট্যাটের দোকান। তাদের সঙ্গে আমাদের কোনও লেনদেনই হয়নি।’

এদিকে, চেকের সবকিছু ঠিক দেখেই অর্থ পরিশোধ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সোনালী ব্যাংক বোর্ড শাখার ম্যানেজার সাহিদুর রেজা।

তিনি বলেন, ‘বোর্ড কর্তৃপক্ষ বড় বড় চেক প্রায়ই ইস্যু করে। চেকের স্বাক্ষর ও নম্বর ঠিক ছিল। যে কারণে ক্লিয়ার করা হয়েছে।’যশোর শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর মোল্লা আমীর হোসেন জানান, ঘটনাটি কীভাবে ঘটলো তা জানতে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।দুর্নীতি দমন কমিশন যশোর সমন্বিত কার্যালয়ের (দুদক) উপ-পরিচালক মো. নাজমুচ্ছায়াদাত বলেন, শিক্ষাবোর্ডের টাকা আত্মসাতের বিষয়টি শুনেছি। আগামী রবিবার (১০ অক্টোবর) আমরা সব নথিপত্র দেখবো। বিষয়টি তদন্ত করে হেড অফিসে জানানো হবে।