হুমকীতে প্রতিরক্ষা বাঁধ,কমছে ফসলী জমি,বায়ু ও শব্দ দূষণে অতিষ্ঠ মানুষ কুমিল্লায় বেপরোয়া গোমতীর মাটিকাটা সিন্ডিকেট

13

কুমিল্লা প্রতিনিধিঃ কুমিল্লার প্রধান নদী গোমতীর চরাঞ্চলে এস্কেভেটর দিয়ে অবাধে মাটি কাটছে মাটিখেকোদের সিন্ডিকেট। এতে একসময়ের জেলার শস্যভান্ডার খ্যাত গোমতীর চরের শত শত এশর বর্তমানে চাষাবাদ শুন্য বা পরিত্যক্ত। প্রতিবছর উজান থেকে আসা পলিতে উর্বর গোমতীর চরে বছরব্যাপী ফসল ফলানোর স্বপ্ন দেখতো কৃষক। সাম্প্রতিক সময়ে ভুমিখেকোরা এতটাই বেপরোয়া যে, রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে অবাধে প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে গোমতীর চরাঞ্চল থেকে রাতভর মাটি কেটে বিক্রি করছে। এ মাটি মহাসড়ক পথে নিয়ে যাচ্ছে বিভিন্ন গন্তব্যে। খোলা ডাম্পট্রাকে মাইলের পর মাইল পথ অতিক্রম করায় বিবর্ণ হচ্ছে মহাসড়ক,বাড়ছে দুর্ঘটনার ঝুঁকি, ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে প্রতিরক্ষা বাঁধ,বায়ু ও শব্দ দূষনে নদীপাড়ের মানুষের দুর্ভোগ চরমে। সরেজমিন ঘুরে বিভিন্ন সুত্রে পাওয়া তথ্যে জানা যায়, জেলার প্রধান নদী গোমতী । ভারতের ত্রিপুরা থেকে উৎপন্ন নদীটি কটকবাজার সীমান্ত হয়ে কুমিল্লায় প্রবেশ করে কুমিল্লা সদর ,বুড়িচং,ব্রাহ্মনপাড়া,দেবিদ্বার, মুরাদনগর,তিতাস হয়ে দাউদকান্দির সাপটায় মেঘনা নদীর সাথে মিলিত হয়। নদীর দু’তীরে রয়েছে বিস্তৃর্ণ চরাঞ্চল। প্রতিবছর উজান থেকে আসা পালির সাথে বিপুল পরিমান পলি বহন করে নদীর দু’তীরের চরাঞ্চলকে উর্বর করে। আর সেই চরে সারা বছর চাষাবাদ করে ভাগ্য পরিবর্তনে ব্যস্ত সময় পার করার স্বপ্ন দেখে কৃষক। এই চরে ধান,পাট,গম,সরিষা,শীতকালীন বিভিন্ন শাকসব্জি,আখ,বারো মাসী মুলা উৎপাদন হয়। কিন্তু অভিযোগ রয়েছে ,সাম্প্রতিক সময়ে মাটি খেকোরা এতটাই বেপরোয়া যে, রাতের আধাঁরে তারা এস্কেভেটর দিয়ে অবাধে মাটি কেটে ডাম্প ট্রাকযোগে বিভিন্ন স্থানে বিক্রির জন্য নিয়ে যাচ্ছে। এতে কৃষকরা প্রতিবাদ করলে হামলা-মামলাসহ নানা ভাবে হয়রানীর শিকার হতে হচ্ছে। পাশাপাশি ভারি ডাম্পট্রাকযোগে মাটি পরিবহনের ফলে গোমতীর প্রতিরক্ষা বাঁধও বিভিন্নস্থানে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। এধবস্থায় কৃষকদের স্বার্থ ,প্রতিরক্ষা বাঁধ রক্ষায় কুমিল্লা জেলা ও জেলার বিভিন্ন উপজেলা প্রশাসন গোমতীর চরাঞ্চল থেকে মাটি কাটা ও নদী থেকে বালু উত্তোলনে নিষেধাজ্ঞা জারী করে। এতে মাটি খেকোরা দিনে মাটি কাটা বন্ধ রাখলেও সন্ধ্যার পর থেকে সকাল পর্যন্ত মাটি কাটা অব্যাহত রাখছে। কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলার দুর্গাপুর (উত্তর) ইউনিয়নের আমতলী এলাকায় আলমগীর, ইয়াকুব,মিজান, রিপন, মোস্তফা,মনির, বায়েজিদ, হালিম, মাসুদসহ একটি সিন্ডিকেট প্রশাসনের চোঁখ ফাঁকি দিয়ে রাতের আধারে অবাধে মাটি কাটা অব্যাহত রাখছে। এতে চরাঞ্চল যেমন কৃষক শুন্য হয়ে পড়ছে,তেমনি প্রতিরক্ষা বাঁধ হুমকীর মুখে,পাশাপাশি শব্দ ও বায়ূদূষনে চরম দুর্ভোগ মানুষের। এবিষয়ে নদীর আমতলী ও বাগিলারা এলাকার একাধিক কৃষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, মাটি কাটছে,সেই মাটি সড়ক-মহাসড়ক হয়ে বিভিন্নস্থানে পৌঁছে দিচ্ছে সিন্ডিকেটের লোকজন সেটা প্রশাসন দেখছে। কোন ব্যবস্থা না নেওয়ায় তারা ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তবে নিজেরা প্রতিবাদ করতে সাহস পান না হয়রানী হওয়ার ভয়ে। এব্যাপারে কুমিল্লা ময়নামতি হাইওয়ে ক্রসিং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ ইকবাল বাহার মজুমদার বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। আপনার কাছ থেকে শুনলাম। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব। কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রোমেন শর্মা বলেন, গোমতীর আমতলী অংশে কিছু ব্যক্তিমালিকানাধীন জমিতে শর্ত সাপেক্ষে মাটি কাটার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। শর্তের বরখেলাফ করলে আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করবো। কুমিল্লা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী খান মোহাম্মদ ওয়ালিউজ্জামান বলেন,বিগত সময়ে একাধিকবার মাটিকাটায় জড়িতদের বিরুদ্ধে অভিযান করেছি। এখন আবার আপনার মাধ্যমে মাটি কাটার বিষয়টি জানতে পারলাম। অচিরেই ব্যবস্থা নেব। ক্যাপশনঃ সদর উপজেলার আমতলী গোমতীর চওে বেপরোয়া মাটি কাটায় লন্ডভন্ড চরের ফসলী জমি। কুমিল্লায় (অর্নব) হত্যা মামলার ৪ আসামী গ্রেফতার ৪ রাউন্ড গুলিসহ ১ টি বিদেশী পিস্তল উদ্ধার। মোহাম্মদ রবিউল আলম শাওন গত ১৯ মার্চ ২০২৪ ইং তারিখ র্যাব-১১, সিপিসি-২ একটি বিশেষ আভিযানিক দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে কুমিল্লা জেলার কোতয়ালী মডেল থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে কুমিল্লা কোতয়ালী থানার শাসনগাছা লেগুনা ও সিএনজি অটোরিকশা স্ট্যান্ডের দখল নিয়ে চাঞ্চল্যকর কলেজ ছাত্র জামিল হাসান (অর্নব) (২৭) হত্যা এবং ৬ জনকে গুলিবিদ্ধ করার মামলার আসামী ১। মোঃ মোজাম্মল হোসেন (জনি) (২৫), পিতা-মকবুল মিয়া, সাং-শাসনগাছা (মুন্সী বাড়ি), ২। ফয়সাল আহমেদ ( রিমন) (২০), পিতা-আইয়ুব আলী, সাং-শাসনগাছা (মোল্লা বাড়ী), ৩। সাইফ আলী রিয়াদ (২২), পিতা-আতিকুর রহমান খোকন, সাং-শাসনগাছা, এবং ৪। মোঃ শুভ (২২), পিতা-মোঃ আনু মিয়া, সাং-শাসনগাছা, সর্ব থানা-কোতয়ালী, জেলা-কুমিল্লাদের’দের গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। এসময় আসামীদের নিকট হতে ১ টি বিদেশী পিস্তল ও ১ টি ম্যাগাজিনসহ ৪ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়। প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা যায় , গত ১৫ মার্চ ২০২৪ তরিখ মধ্যমপাড়ার আবুল কাশেমের দলের সঙ্গে মোল্লা বাড়ির ফজলে রাব্বি ও আলাউদ্দিনের দলের সংঘর্ষ এবং গোলাগুলি হয়। ঘটনার একপর্যায়ে, জামিল হাসান অর্নব বুকের বাম পাশে গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যুবরণ করে এবং মোঃ অনিক (২৮), নাজমুল (২৮), মোঃ দিপু (৩৫), নিশু (২২), মোঃ মোহন (২০) ও রিনা (৪৫) গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুত্বর আহত হয়। এ ঘটনায় ভিকটিমের মাতা বাদী হয়ে আসামীদের বিরুদ্ধের কুমিল্লা জেলার কোতয়ালী মডেল থানায় ১টি হত্যা মামলা দায়ের করে। ঘটনার পরপরই র্যাব-১১, সিপিসি-২, কুমিল্লা ঘটনার সাথে জড়িত দের শনাক্ত করে তাদের গ্রেফতার এর লক্ষ্যে ছায়া তদন্ত শুরু করে। পরবর্তীতে র্যাব-১১ এর চৌকস আভিযানিক দল ১৯/০৩/২০২৪ ইং তারিখ গোয়েন্দা নজরদারির মাধ্যমে চাঞ্চল্যকর কলেজ ছাত্র জামিল হাসান অর্নব (২৭) হত্যা মামলার সাথে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত ৪ জন আসামীকে টি বিদেশী পিস্তল ও ১ টি ম্যাগাজিনসহ ৪ রাউন্ড গুলিসহ গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। আসামীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কোতয়ালী মডেল থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানান কুমিল্লা র্যাব-১১, সিপিসি-২, কোম্পানী অধিনায়ক উপ-পরিচালক লেঃ কমান্ডার মাহমুদুল হাসান।