গ্রাম্য আদালতের রায় অবমাননা করে এতিমের সম্পত্তি আত্মসাতের পাঁয়তারা

189

আলম খান : নরসিংদী জেলা শিবপুর উপজেলার সাধারচর ইউনিয়ন এর কালুয়ারকান্দা গ্রামের মৃত নাছির আফ্রাদ মাষ্টারের ছেলে আলমগীর আফ্রাদ পাশ্ববর্তী পুটিয়া ইউনিয়ন মুনসেফেরচর কাঁঠালতলা গ্রামের মৃত: নুরুল ইসলামের মেয়ের সাথে ২০১০ইং সালে নভেম্বর মাসে মুসলিম রীতি অনুযায়ী বিয়ে হয়। দাম্পত্য জীবন সুখে কাটছিল, তাদের সংসারে ১টি মেয়ে, ১টি ছেলে রয়েছে, মেয়ের নাম:আনিসা (১২),ছেলের নাম : আল হাদী সুখের সংসারে মাঝে ভাল চলছিল, তার মাঝে গত ২৯ ই আগষ্ট ২০২০ ইং সালে স্বামী আলমগীর অসুস্থ হয়ে মারা যায়। স্বামী আলমগীর মারা যাওয়ার পর ছেলে-মেয়েদের ভরণপোষণের জন্য শাহিদার বড় ভাই মোজাম্মেল হোসেন মজনু দ্বায়িত্ব পালন করে। বড় ভাই মোজাম্মেল হোসেন মজনু সহযোগিতায় পরবর্তী কালুয়ারকান্দা নিজ বাড়িতে মহিলা মাদ্রাসা ও ব্রয়লার মুরগি ফার্ম পরিচালনা করে সংসার চালাতে থাকে। মহিলা মাদ্রাসা রমজানে ছাত্রীদের ছুটি দেন। রোজার ঈদ ছেলে, মেয়ে কে নিয়ে বাবার বাড়িতে ঈদ করেন। পরে নারায়ণগঞ্জ পঞ্চবটি আয়েশা সিদ্দিকা মাদ্রাসায় শিক্ষকতা চাকুরী হয়, চাকুরীরত অবস্থায় প্রতিবেশী ফোন দিয়ে জানায়,আপনার ঘরের মালামাল ভিতর থেকে সরিয়ে ফেলা হচ্ছে।সরজমিনে কালুয়ারকান্দা গ্রামে গেলে, বেড়িয়ে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য, বাড়ির সামনে শাহিদার শাশুড়ী ও ননদ তাছলিমা সাথে কথা হলে জানান, শাহিদা আমার ছোট ছেলে মৃত আলমগীর আফ্রাদের বউ, সে দায়েরা হাদিস পাস, আমার ছেলে দায়রা হাদিস পাস। এই বছর ২০২৩ইংসালে রোজার ঈদে শাহিদা নিজ ঘরে তালা মেরে বাবার বাড়িতে চলে যায়। তার বাড়িতে আমি যাই না। প্রশ্ন করা হলে শাহিদা ঘরের মালামাল কে নিয়ে যায়, শাশুড়ি বলে শাহিদা নিজে রাতের আধারে ঘরে ঢুকে মালামাল নিয়ে গেছে।

প্রতিবেদক প্রশ্ন করলে কোন সাক্ষী আছে শাশুড়ী রিজিয়া বলেন আছে পাশ্ববর্তী বাড়ির বৃদ্ধ মহিলা সামনে এগিয়ে আসে, তিনি প্রথমে বলেন, আমি সাক্ষী। উক্ত বৃদ্ধ মহিলা কে আমাদের প্রতিবেদক আবার প্রশ্ন করেন, আপনি নিজ চোখে দেখেছেন তখন তিনি বলেন না।আমি শুনেছি। পরবর্তী রিজিয়া আক্তার বলেন, তার ঘরের মাল সেই নিয়া গেছে সাক্ষী আমি নিজেই আমাদের প্রতিবেদক, আবার জিজ্ঞেস করেন, আপনি নিজ চোখে দেখেছেন এইবার আমতা আমতা করে শাহিদা শাশুড়ী মুখ থেকে বের হয়ে আসে না, আমি নিজ চোখে দেখি নাই। শাহিদা গ্রাম্য আদালতে কোন অভিযোগ করেছে জানতে চাইলে, রিজিয়া আক্তার বলেন, করেছে মহিলা মেম্বার রিনা বেগম,জহির মেম্বার গ্রাম পুলিশ নিয়ে আমাদের বাড়িতে আসে তারা বলে, শাহিদা ঘরের মালামাল দেখার জন্য তালা খুলে দেন, রিজিয়া আক্তার বলেন, আমি তালা খোলে দেইনি। রিজিয়া বেগম কে আবার প্রশ্ন করা হলে? আপনার নাতি ও নাতনি কে ভরণপোষণ করতো, তার উত্তরে রিজিয়া আক্তার জানান, আমার স্বামী মৃত নাছির আফ্রাদ মাষ্টারের পেনশন টাকা প্রতিমাসে ৩ হাজার টকা ২হাজার টাকা ,১ হাজার টাকা দিতাম তার বড়ো ভাই ও শাহিদার ভরনপোষণের টাকা দিত। এখন আপনার নাতি ও নাতনি বাড়িতে জাগয়া দিচ্ছেন না কেন? এই প্রশ্নের উত্তরে শাহিদা ননদ তাছলিমা জানান,সে বিয়ে বইছে তাই এই বাড়িতে কোন জায়গা নাই। আমার মার নামে এই বাড়ি তাহলে কি এতিম আনিসা ও আল হাদী তাদের বাড়িতে থাকবে না!  সঠিক কোন উত্তর আসেনি হায়রে মানবতা!

সাধারচর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোর্শেদ সাহেবের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, মৃত নাছির মাষ্টার সাহেবের ছোট ছেলে মৃত আলমগীর আফ্রাদের স্ত্রী ১০/০৭/২০২৩ ইং তারিখে একটি লিখিত অভিযোগে এতিমের বসতবাড়ির রুম থেকে তালা ভেঙ্গে যে সকল মালামাল অপহরণ করা হয়েছে তা উদ্ধারের জন্য আবেদন করে। আমার সাধারচর ইউনিয়ন পরিষদের গ্রাম্য আদালতে মাধ্যমে উক্ত ওর্য়াডের ইউপি সদস্য ও সদস্যাদের দিয়ে একটি তদন্ত টিম গঠন করে মৃত আলমগীর আফ্রাদের বাড়িতে গ্রামপুলিশসহ পাঠাই তারা গেলে মৃত আলমগীর আফ্রাদের মা রিজিয়া আক্তার তাদের ঘরের ভিতর ঢুকতে দেয়নি। গ্রাম্য আদালতের কাজ হলো আর্তমানবতায় অসহায় মানুষের জন্য সঠিক কাজ করা। গ্রাম্য আদালতের প্রথম নোটিশ দিলে মৃত আলমগীর আফ্রাদের মেজ ভাই গোলজার আফ্রাদ পরবর্তী সময় এসে সময় নেয় বাড়িতে মার সাথে কথা বলে সময় দিবেন। ধারাবাহিকভাবে শেষ নোটিশ দেওয়ার পর গ্রাম্য আদালতে চুড়ান্ত রায়ের দিন মৃত আলমগীর আফ্রাদের মা ও ভাই রিজিয়া আক্তার ও গোলজার আফ্রাদসহ বিবাদীর পক্ষের কেউ আসেনি। গ্রাম্য আদালত অবমাননা করা হয়েছে। এলাকাবাসী জানায় এতিমের সম্পদ ও জায়গা আত্মসাৎ এর জন্য পায়তারা চলছে,এতিমরা তাদের মালামাল ও নিজ বাড়িতে মাকে নিয়ে থাকতে পারে সে ব্যবস্থা করা প্রয়োজন। ১২ বছরের আনিসা ও ৭ বছরের আল হাদী জানায়, আমাদের বাড়িতে গোলজার কাকা ও দাদী ঢুকতে দেয় নাই, আমাদের মারাতে আসে। শাহিদা বলেন,সমাজের লোকজন মিলে আমাকে দ্বিতীয় বিয়ে দিয়েছে এতিম বাচ্চাদের মঙ্গলের জন্য। তোমাদের কাকা কোন সময় মজা কিনে দিয়েছে ছোট আল হাদী উত্তর আসে কোনদিন দেয় নাই! এই ব্যাপারে এলাকাবাসী জানায়, একদিন বাড়ির পাশের দোকানে গোলজার আফ্রাদ তার ছেলে কে মজা কিনে দিচ্ছে তা ছোট হাদী কান্না করে এতে পাশের বাড়ির একজন ২০ টাকা আল হাদীকে মজা কিনে খেতে দেয়। যারা রাষ্ট্র ও সমাজ ব্যবস্থায় আছেন তারা কি? পারবেন না এতিমের মালামাল ও বাড়ি ফিরিয়ে দিতে!